এবার শুনে অবাক লাগলেও শুধুমাত্র ভিক্ষাবৃত্তি করেই জমি, দোতলা বাড়ি, বাইক, স্মার্ট ফোনসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্যের মালিক হয়েছে এক পরিবার। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশে। মঙ্গলবার ১৩ ফেব্রুয়ারি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি জমি, একটি দোতলা বাড়ি, একটি মোটরসাইকেল, ২০ হাজার রুপি মূল্যের স্মার্টফোন এবং ছয় সপ্তাহের মধ্যে আড়াই লাখ রুপি নগদ অর্থ। মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে নিজের সন্তানদের দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করিয়ে এসব সম্পদ তৈরি করেছেন এক নারী। এই ঘটনায় তাকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, ইন্দ্রা বাই নামের ওই নারীকে হেফাজতে নেওয়ার পরে সোমবার রিমান্ডে জেলে পাঠানো হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এমনকি তিনি তার এক মেয়েকে ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়েছে। তাকে একটি এনজিওর হেফাজতে রাখা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, রাজস্থনের গ্রাম থেকে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর শহরে এসে সেখানকার এক রাস্তার মোড়ে সপরিবারে ভিক্ষা করে লাখ লাখ রুপি উপার্জন করেছে ওই পরিবার। স্বামী-স্ত্রী নিজেরা তো ভিক্ষা করেনই, একই কাজে লাগিয়েছেন তাদের পাঁচ সন্তানের তিনজনকে।
এদিকে বাকি দুই সন্তানকে তারা রেখে এসেছেন গ্রামের বাড়িতে। সম্প্রতি ইন্দোরের লব কুশ স্কোয়ার মোড়ে প্রশাসনের হাতে ধরা পড়েছেন এই নারী। তিনি জানিয়েছেন, গত ৪৫ দিনে তিনি আড়াই লাখ রুপিরও বেশি অর্থ উপার্জন করেছেন!
সংবাদমাধ্যম বলছে, ৪৫ দিনে যে আড়াই লাখ রুপি আয় হয়েছে, তার থেকে ১ লাখ রুপি তিনি গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়েছেন। আর, ৫০ হাজার রুপি দিয়ে তিনি ছেলে-মেয়েদের নামে একটি ফিক্সড ডিপোজিট করেছেন। বাকি টাকা, নিজেদের পেছনে ব্যবহার করেছেন।
এদিকে অভিযুক্ত ওই নারী জানিয়েছেন, উৎসব বা বিবাহের মৌসুমে দুই সপ্তাহে তার ৫০ হাজার রুপি পর্যন্ত আয় হয়েছে। মূলত ভিক্ষাবৃত্তিকে একেবারে পারিবারিক ব্যবসার পরিণত করেছে এই পরিবার। স্বামী-স্ত্রী এবং তাদের ৩ সন্তানের সকলেই ভিক্ষা করেন। শুধু তাই নয়, ওই নারীর বোন এবং ভগ্নিপতিও একই কাজে যুক্ত।
এই নারীকে আটকের সময় তার কাছ থেকে নগদ অর্থও উদ্ধার করা হয়। অবশ্য এই মা-মেয়ে প্রশাসনের হাতে ধরা পড়লেও পালিয়ে গেছেন বাবা এবং তাদের অন্য দুই ছেলে-মেয়ে। ধরা পড়েছেন ওই নারীর বোন ও ভগ্নিপতিও। অবশ্য মধ্য ভারতে বর্তমানে সবচেয়ে বড় এবং সহজ ব্যবসা হয়ে উঠেছে ‘ভিক্ষাবৃত্তি’।
শুধুমাত্র ইন্দোর শহরেই সাত হাজারেরও বেশি ভিক্ষুক রয়েছে। তাদের সকলেরই আয়-রোজগার বেশ ভালো। এই সাত হাজার ভিক্ষুকের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের মতো। এদিকে জেলা কালেক্টর আশীশ সিং ইন্দোর শহরকে ভিক্ষুক মুক্ত শহর হিসাবে গড়ে তোলার জন্য কর্মকর্তাদের তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শিশুদের পুনর্বাসন করে স্কুলে পাঠানো উচিত।